Monday 10 October 2022

মাদক মানবতাকে বিপর্যস্ত করে।

 মাদক নামক এক ভয়াল আগ্রাসী নেশা ধীরে ধীরে খেয়ে ফেলছে আমাদের প্রজন্মকে। মাদকের ভয়ানক আসক্তি সমাজ, দেশ ও রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে দীর্ঘমেয়াদে নৈতিক অবক্ষয় ঘটাচ্ছে কিংবা ভবিষ্যতেও ঘটাবে। সাধারণত ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, প্যাথেডিন, আফিম, মদ, গাঁজা ও ভাংসহ বিভিন্ন নামে বিভিন্নরূপে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলছে।

নেশাখোর দিন দিন শীর্ণকায় হয়ে যায়, হাত-পা দুর্বল, খিদে কম, কাজকর্ম করার মতো শারীরিক ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। কিডনি, লিভার, হার্ট বিনষ্ট হয়ে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে তারুণ্য জীবনের মাঝপথেই। গাঁজা, ভাং, ইয়াবা ধরনের মাদক জীবন নিঃশেষ করে দেয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন মারাত্মক নেশাজাতীয় দ্রব্য। নেশা ধরায় আরও অনেক রকমের মাদক, হেরোইন, ফেনসিডিল, অ্যালকোহল, তামাকজাত দ্রব্য (জর্দা, গুল, সাদাপাতা) এবং নামে-বেনামে আরও অনেক মাদক। মিয়ানমারের নির্জন পাহাড়ের ঘন অরণ্যের ভেতরে 'গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল' নামক এলাকা ইয়াবা ব্যবসায়ের কেন্দ্রবিন্দু। দেশটির সরকার নিজের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধির লোভে এ জঘন্য ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক আরও আসে আফগানিস্তান থেকে। ব্রিটিশরা কয়েক শতাব্দী আগেই বিভিন্ন প্রকার মাদক অবিভক্ত ভারত উপমহাদেশে প্রচলন করে দিয়েছিল যাতে প্রজারা রাজার বিরুদ্ধে আন্দোলন করার মতো শক্তি হারিয়ে ফেলে, যেন মাদকাশক্ত হয়ে সারা দিনরাত ঝিম মেরে পড়ে থাকে। বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী-তরুণ-তরুণীদের একটা অংশ ডুবে যাচ্ছে মাদকে, হারিয়ে ফেলছে জীবনীশক্তি। অকর্মণ্য হয়ে যাচ্ছে সমাজজীবনে। মাদকসেবীরা কোথাও কোথাও ভাইকে, মাকে, স্ত্রীকে, বাবাকে পর্যন্ত খুন করছে নেশার ঘোরে কিংবা মাদক কেনার টাকার জন্য। কলেজ ছাত্রী ঐশীর কথা নিশ্চয়ই কেউ ভুলে যায়নি, যে মেয়েটি নেশার কারণেই বাবা-মাকে হত্যা করে।
তাই, পরিবার থেকে সচেতনতা শুরু করার বিকল্প নাই। সন্তানদের সঙ্গে পারিবারিক বন্ধন বাড়াতেই হবে। দেশব্যাপী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। এ অভিশাপ থেকে তরুণ প্রজন্মকে বাঁচাতে সরকারের পাশাপশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রজন্ম বাঁচলে জাতি বাঁচবে।











No comments:

Post a Comment