Saturday 6 April 2019

সিদ্ধান্তটা নিতান্তই বাবার ছিলো

মধ্য সন্তোষপুর নিকটতম বিদ্যাপীঠ জেনেও দিনশেষে পড়াশুনা করতে হলো সন্তোষপুর উচ্চবিদ্যালয়ে, সিদ্ধান্তটা নিতান্তই বাবার ছিলো। তখন মনটা চাইতো একা এতদুর না হেটে বন্ধু-সহপাঠিরা যেখানে সেখানেই ভালো ছিলো। আমার দিক থেকে যাই হোক বাবার দিকটা ছিলো বাবার মতই- কারন আমি তখন জানতাম না, সন্তোষপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে আমার বাবা মাস্টার আনোয়ার হোসেন ছিলেন অন্যতম। মরহুম জেঠাজী মাস্টার আব্দুল হক সাহেব প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর জুনিয়র হাইস্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন আমার বাবা ও বাবার একজন সেরা বন্ধু মরহুম মৌঃ মোঃ হাসান সাহেব, মাস্টার আব্দুল হক সাহেব মৃত্যু বরণ করলে তাঁর দুই ভাই হাইস্কুলের জন্য জমি দান করেন। আমার বাবা ও হাসান কাকা অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রতিষ্ঠা করেন সন্তোষপুর উচ্চবিদ্যালয়। হাসান কাকার অক্লান্ত পরিশ্রমের পাশাপাশি মান অভিমান ছিলো, তিনি একবার তাঁর সকল ছাত্র-ছাত্রীদের এমনকি নিজের সন্তানদেরকে ও নিয়ে মধ্য সন্তোষপুর উচ্চবিদ্যালয়ে চলে গেলেও আমার বাবা অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে নিজের ব্যক্তিগত সম্পর্কটাকে কাজে লাগিয়ে পুনরায় তাঁকে (হাসান কাকাকে) সন্তোষপুর উচ্চবিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তিনি ব্য়য় করেছেন বিদ্যালয়টির জন্য। ১৯৮৯ সালের ১৫ই আগস্ট এর ভোর রাতে বাবা মৃত্যুবরণ করলে সদ্য প্রয়াত মাস্টার শফিকুল মাওলা মানিক সাহেব বিদ্যালয়টি ছুটি ঘোষনা করে সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সদস্যগন সহ বাবাকে শেষ দর্শন করতে এসে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন, আহাজারী করেন, শান্তনা দেন।...... বিশ্বাস করি কীর্তিমানের মৃত্যু নাই, মেনে নিই আমার ইচ্ছার বিরুদ্দে বাবা আমাকে তার প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ে পড়ানোর সিদ্ধান্তটা তার অবস্থানে থেকে সঠিক ছিলো।

www.anwartrust.wordpress.comসিদ্ধান্তটা নিতান্তই বাবার ছিলো