Sunday 31 July 2022

সমাজ সংস্কারক মাস্টার আনোয়ার হোসেন।

 সমাজ সংস্কারক মাস্টার আনোয়ার হোসেন ( মাস্টার আনোয়ার স্মৃতি সংসদ) শিক্ষা বিস্তারে ানবদ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি নিজ পৈত্রিক সম্পত্তিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উত্তর সন্তোষপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় যাহা পরবর্তীতে জাতীয়করন করা হয়। সন্তোষপুর কাসেমুল উলুম মাদ্রাসার জমি দাতাদের অন্যতম একজন ও ছিলেন তিনি। সন্তোষপুরের প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনার ক্ষেত্রে মাস্টার আনোয়ার হোসেন প্রত্যক্ষ পরোক্ষ ভূমিকা ও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন মরহুম মাস্টার আব্দুল হক সাহেবের পরম বন্ধু ও সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। অসুস্থ মাস্টার আব্দুল হক সাহেব চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়ার পূর্বে তাহার পারিবারিক সম্পত্তির যাবতীয় কাগজ পত্র দলিল দস্তাবেজ ও বিদ্যালয়ের যাবতীয় কাগজপত্র সমুহ মাস্টার আনোয়ার হোসেন সাহেবের হাতে তুলে দেন এবং বলেন তুমি আমার ছোট ভাই বন্ধু হিসাবে আমার অবর্তমানে দায়িত্ব নেবে। মাস্টার আনোয়ার হোসেন এর ঘনিষ্ঠ বন্ধু সমাজ সেবক মৌলভী হাসান সাহেব সেসময় উপস্থিত ছিলেন। সেই থেকে জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দায়িত্বে ছিলেন। কোন অজুহাতে বা কারনে এক দিনের জন্যও তিনি বিদ্যালয় থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন না।

মাস্টার আনোযার হোসেন সাহেব তার এলাকার, সন্দ্বীপের বিভিন্ন প্রান্তের এমনকি হাতিয়া নোয়াখালী, কুতুবদিয়ার গরীব মেধাবী ছাত্রদেরকে নিজ দায়িত্বে স্কুলে ভর্তি করাতেন লেখাপড়া করাতেন। তাঁর ভাতিজা জসীম উদ্দিন আহমেদ কে তাাঁহার পিতা মরহুম আব্দুল মালেক কোম্পানী কাটগড় গোলাম নবী হাই স্কুলে ভর্তি করাতে চাইলেও মাস্টার আনোয়ার হোসেন এর অনুরোধে সন্তোষপুর উচ্চবিদ্যালয়ে লেখাপড়া করান। সেই জসীম উদ্দিন আহমেদ এ যাবত কালের সেরা রেকর্ড ফার্স্ট স্ট্যান্ড (কমার্স ) করেন সে রেকর্ড সন্দ্বীপের আর কোন স্কুলের নাই। তাহার পরিবারের আরেক মেধাবী ছাত্র মাস্টার একেএম নুরছাফা (Akm Nur Safa ) এর ক্ষেত্রে অনুরুপ ঘটনার পূনরাবৃত্তি হতে পারতো যদি মরহুম মুন্সী নুর হোসে সাহেবের ইচ্ছামতো লেখাপড়া করানো হতো। মাস্টার একেএম নুরছাফা বিদ্যালয়ের চরম সংকটাপন্ন সময়ে সায়েন্স থেকে এসএসসি ১ম বিভাগে পাশ করে ঐ সময় স্কুলের ইজ্জত রক্ষা করেছিলেন। এভাবে অসংখ্য উদাহরণ রযেছে বলে বা লিখে শেষ করা যাবে না। মাস্টার আনোয়ার হোসেন এর কাচারী ঘর ও নিজ বসতগৃহের দক্ষিণাংশ বছরের পর বছর সন্তোষপুর হাই স্কুলের গরীব ও মেধাবী ছাত্রদের জন্য ফ্রি হোস্টেল হিসাবে চালু ছিলো। কীর্তি মানের কখনো মৃত্যু হয় না। তাহারা ইহকাল ত্যাগ করিলেও মানুষের মনে বেঁচে থাকেন আজীবন।
১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট ভোর রাতে মাস্টার আনোয়রে হোসেন মৃত্যুবরণ করেন। সেসময়কার প্রধান শিক্ষক মরহুম মাস্টার শফিকুল মাওলা মানিক সাহেব বিদ্যলয় ছুটি ঘোষণা করে(তখন ১৫ আগস্ট বিদ্যালয় খোলা থাকতো) শিক্ষক, কর্মচারী , অভিভাবক ও ছাত্রদের নিয়ে জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। আমরা এই মহান ব্যতক্তর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।