Tuesday, 14 August 2018

নেশার হাতেখড়ি ধুমপান।

মরণনেশা মাদক আমাদের গোটা সমাজকে গ্রাস করে চলছে। এর শিকার যুব ও তরুণসমাজ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাদকের বিরুদ্ধে যতোই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, ততোই অভিনব কৌশলে বাড়ছে এর ব্যবহার। মাদক সেবনের আরেক নাম মৃত্যু। যেকোনো ধরনের মাদক সেবনের অর্থই হলো নিজেকে মৃত্যুর মুখে পতিত করা। স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী-চাকরিজীবীরাও ক্রমে জড়িয়ে যাচ্ছে মাদকের মতো মরণজালে। উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরাও মাদক সেবনে আগ্রহী হয়ে উঠছে। মাদকের মরণনেশায় আসক্ত হয়ে বহুমাত্রিক অপরাধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে যাচ্ছে তারা। মাঝে মাঝে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এসব মাদকদ্রব্য আটক করলেও ঠেকানো যাচ্ছে না এগুলোর প্রবেশ। বিভিন্ন এলাকায় গডফাদারসহ বহু লোক মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। দেশে যখন বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম উর্ধমুখী, তখন বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের দাম কমছে। সস্তা দামের এসব মাদকদ্রব্য সীমান্তের ওপার থেকে এদেশে প্রবেশ করছে। ধ্বংস করছে যুব সমাজকে। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, দিন যতো যাচ্ছে মাদকদ্রব্য ও মাদক গ্রহণের ধরণ পাল্টাচ্ছে। নেশাখোররা এক সময় মদ ও গাঁজা সেবন করতো। এরপর এলো হেরোইন ও ফেনসিডিল। এখন এক ধরণের জেলী, টিকটিকি ভাজা মিশ্রিত মাদক ও ইয়াবা অধিকতর জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নেশাখোরদের কাছে।
ইয়াবা এখন দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়াতেও ইয়াবার থাবা বিস্তৃত হচ্ছে বলে অনেকের আশঙ্কা। সচেতন মহল মনে করেন, নেশাশক্তির সূত্রপাত হয় ধূমপান থেকে। এক পর্যায়ে অনেক ধূমপায়ী সিগারেটের ভেতর গাঁজা ঢুকিয়ে ধূমপান করতে শুরু করে। পরবর্তীকালে সে ধরে হেরোইন। এভাবে একজন ধূমপায়ী ধীরে ধীরে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তারা শিশু কিশোর ছাত্রছাত্রীদের ধূমপান থেকে বিরত রাখার উপর জোর দিচ্ছেন। সমাজ থেকে মাদকাসক্তি নির্মুলে মাদকদ্রব্য বিরোধী অভিযানের পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের মাদক পাচার বা চোরাচালান রোধে জোরদার কর্মসূচী গ্রহণ করা জরুরি। সীমান্তে মাদক চোরাচালান বন্ধ করতে না পারলে মাঝে মাঝে কিছু গাঁজা, হেরোইন কিংবা ফেনসিডিলের বোতল আটক করে মাদকদ্রব্য সেবন বন্ধ করা যাবে না। দেশের তরুণ ও যুব সমাজকে নেশার নীলদংশন থেকে রক্ষা করতে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা ও কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করি। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মাদকের কবল থেকে রক্ষার জন্য সবাইকে একসাথে দায়িত্ব পালন এবং মাদক ব্যবসায় জড়িতদের আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। এজন্য ব্যাপক গণসচেতনতা গড়ে তোলার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশ ও সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে এবং অভিযানের আইওয়াশ বন্ধ করে মরণনেশা মাদকের এ ভয়াবহ বিস্তার রোধে প্রয়োজনে সরকারকে আরও কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
www.anwartrust.wordpress.comwww.youtube.com/anwartrust

No comments:

Post a Comment